প্রচ্ছদ » বিশেষ সংবাদ » বিস্তারিত

গ্রাহকের জরিমানার অর্থ ভারতে পাঠিয়ে বিপাকে সোনালী ব্যাংক

২০২৩ নভেম্বর ০৫ ২০:০১:১৯
গ্রাহকের জরিমানার অর্থ ভারতে পাঠিয়ে বিপাকে সোনালী ব্যাংক

আমির হামজা, দ্য রিপোর্ট:বাংলাদেশ ব্যাংককে না জানিয়ে গ্রাহকের জরিমানার টাকা বিদেশে(ভারতে) পাঠিয়ে দিয়েছে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যদিও বাস্তবে সেই গ্রাহকের কোনও অস্তিত্বই নেই। বিষয়টি নজরে এনে ব্যাংককে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, আর্থিক খাতে সুশাসনের ঘাটতির ফলেই ঘটছে একের পর অনিয়ম-দূর্নীতির ঘটনা।

নারায়ণগঞ্জের কুতুব আইল এলাকা, যেখানে অবস্থিত কুতুবাইল টেক্সটাইল মিলস। সোনালী ব্যাংকের লোকাল ব্রাঞ্চের খাতাকলমে এটি বড় মাপের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।কিন্তু বাস্তবে যার অস্বিত্বই নেই। অথচ এই প্রতিষ্ঠান ঘিরেই বড় ধরণের অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে সোনালী ব্যাংকে, যার রেশ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও।

ঘটনাটা বেশ পুরনো,তাও প্রায় তিনদশক আগের। ১৯৯৫ সালে কারেন্ট হিসাব খোলার তিনবছর পর ভারত থেকে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ডলারের মেশিনারিজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়। যার বিপরীতে প্রথম ধাপে প্রায় দুই কোটি রুপির মালামাল বুঝে নেন আমদানিকারক। বিপত্তি বাধে দ্বিতীয় কিস্তিতে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবে চট্টগ্রাম বন্দরে মালামাল আটকে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। পরে সেই মালামাল নিলামে বিক্রি করে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় ২০০১ সালে কোলকাতার আদালতে সোনালী ব্যাংক আর ওই গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করে দেয় কলকাতার প্রতিষ্ঠান উটেক্স টেক্সটাইল। এই মামলার রায়ে সোনালী ব্যাংককে এলসির সমুদয় অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেয় আদালত। এই রায়ের বিপক্ষে ২০০৫ সালে আপিল করে সোনালী ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথম দিকে সেই মামলার রায়েও হেরে যায় সোনালী ব্যাংক। ফলে মামলার খরচ ৮ লাখ ৭২ হাজার ৭১২ রুপিসহ সোনালী ব্যাংককে পরিশোধ করতে হয় ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮৭ ভারতীয় প্রাধিকার বহির্ভূত লেনদেনে সীমাবদ্ধতা থাকলেও তা উপেক্ষা করেছে সোনালী ব্যাংক। এর বিপরীতে সোনালী ব্যাংককে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তথ্য বলছে, এই ঋণের বিপরীতে কুতুবাইল টেক্সটাইলের কোন জামানত নেই। ঋণ নেওয়ার সময় স্বাভাবিক নিয়েমে যেসব তথ্য দেওয়ার কথা তার কিছুই দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি, রয়েছে কেবল প্রতিষ্ঠানের নাম আর ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর ০০২৬৩৩১৪২২৩৮। অভিযুক্ত সবাই অবসরে বলে আর এগোয়নি তদন্ত কমিটির কার্যক্রম। পাশাপাশি নিখোঁজ ওই ব্যবসায়ীও।পিআরআই বাংলাদেশ নির্বাহী পরিচালক ড . আহসান এইচ মনসুর বলেন পুরো ঘটনায় ব্যাংক খাতের সুশাসনের অভাবকেই দায়ী করছেন করা যেতে পারে।তার মতে, এমন ঘটনায় আস্থা হারাবে সাধারণ গ্রাহকের, যাতে ঝুঁকিতে পড়বে আমানতের প্রবৃদ্ধিও।সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন পুরো প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করা হয়েছে। যদিও তারা সামনাসামনি কথা বলতে রাজি হননি কোনো কর্মকর্তা।

(দ্য রিপোর্ট/ আ হা / মাহা/ পাঁচ নভেম্বর দুইহাজার তেইশ)