প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » বিস্তারিত

আলু চাষিদের পাশে দাঁড়াতে হবে সরকারকে

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১২ ০০:০৪:৫৪

উৎপাদিত আলুর ন্যায্যমূল্যের দাবিতে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে মঙ্গলবার মানববন্ধন করেছেন আলু চাষিরা। এ সময় ক্ষুব্ধ চাষিরা প্রতিবাদস্বরূপ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর উপর আলু ছড়িয়ে দেন। তারা বেশ কয়েক মণ আলু ধলেশ্বরী নদীতে ফেলেও দেন। প্রতিবাদকারী চাষিদের দাবি, যেখানে এক কেজি আলু উৎপাদনে তাদের খরচ পড়েছে ১২-১৩ টাকা, সেখানে আলুর বাজার দর রয়েছে কেজিপ্রতি ৫-৬ টাকা। আলু চাষিদের একই ধরনের প্রতিবাদের খবর সারাদেশ থেকেই পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশে বিভিন্ন মৌসুমে কৃষক এই ধরনের প্রতিবাদ করে থাকেন। সংবাদ হিসেবে গুরুত্ব পেলেও ওই প্রতিবাদ করে কৃষক কোনো সুফল পেয়েছেন বলে কোনো নজির আমাদের সামনে নেই। শুধু তাই নয়, তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশের কৃষক উৎপাদিত পণ্যের দাম না পেয়ে আত্মহত্যার মতো চরম পন্থাও বেছে নিয়ে থাকেন। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার সমস্যা শুধু তৃতীয় বিশ্বের নয়, উন্নত অনেক দেশেও এমন ঘটনা ঘটে থাকে।

তবে এ ক্ষেত্রে তৃতীয় বিশ্বের সঙ্গে উন্নত বিশ্বের পার্থক্য, সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের প্রতিবাদ সরকারকে আমলে নিতে হয়। কৃষক যাতে পরবর্তীতে এমন ক্ষতির সম্মুখীন না হন সে জন্য সরকার পদক্ষেপও নিয়ে থাকে। এর ফলে কৃষককে তার সর্বস্ব হারাতে হয় না।

কিন্তু বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের কৃষক এ ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হলে তাকে দেখার কেউ থাকে না। তারা হয়ে পড়েন দেনাগ্রস্ত। এমন কি এক সময় তাকে তারমূল পুঁজিজমিও হারাতে হয়। বাংলাদেশের ভূমিহীনদের ক্রমবর্ধমান তালিকায় রয়েছে এই কৃষকের একটি বড় অংশ।

আমরা মনে করি, কৃষিপণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত সরকারের দায় এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ বছর আলু চাষিরা যে দুরবস্থার শিকার হয়েছেন তা থেকে পরিত্রাণের জন্য দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সরকারকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।