প্রচ্ছদ » » বিস্তারিত

ইসলামে ন্যায্য মজুরি শ্রমিকের অধিকার

 

২০২৪ মে ০১ ১৪:০৭:০০
ইসলামে ন্যায্য মজুরি শ্রমিকের অধিকার
 

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ইসলাম একটি উচ্চ মানসিকতাসম্পন্ন শ্রমনীতির কথা বলেছে, যেখানে শ্রমিকের মানসম্মত জীবন-জীবিকা নিশ্চিত হয়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করেছেন। সুতরাং যার ভাইকে তার অধীন করেছেন সে যেন তাকে তাই খাওয়ায় যা সে খায়, সে কাপড় পরিধান করায়, যা সে পরিধান করে। তাকে সামর্থ্যরে অধিক কোনো কাজের দায়িত্ব দেবে না। যদি এমনটা করতেই হয়, তাহলে সে যেন তাকে সাহায্য করে।’ -সহিহ বোখারি : ৫৬১৭

শ্রমিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মালিকেরই। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মালিকানাধীন (অধীন) ব্যক্তির জন্য খাবার ও কাপড়ের অধিকার রয়েছে। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৬২)অন্য হাদিসে তিনি বলেছেন, যে আমাদের কর্মী নিযুক্ত হয়েছে সে যেন (প্রতিষ্ঠানের খরচে) একজন স্ত্রী সংগ্রহ করে, সেবক না থাকলে সে যেন একজন সেবক খাদেম সংগ্রহ করে এবং বাসস্থান না থাকলে সে যেন একটি বাসস্থান সংগ্রহ করে। যে ব্যক্তি এর অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করবে সে প্রতারক বা চোর গণ্য হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৯৪৫)বেতন ও পারিশ্রমিক কর্মজীবীর অধিকার। ইসলাম দ্রুততম সময়ে তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঘাম শুকানোর আগেই শ্রমিকের পারিশ্রমিক দিয়ে দাও। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪৪৩০)

আরেক হাদিসে পারিশ্রমিক ও প্রাপ্য অধিকার নিয়ে টালবাহানাকে অবিচার আখ্যায়িত করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ধনী ব্যক্তির টালবাহানা অবিচার। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২২৮৭) অর্থাৎ সামর্থ্য থাকার পরও মানুষের প্রাপ্য ও অধিকার প্রদানে টালবাহানা করা অন্যায়। আর ঠুনকো অজুহাতে বেতন-ভাতা ও প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ভয়ংকর অপরাধ। নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির বিপক্ষে থাকব। ... আর একজন সে যে কাউকে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার পর তা থেকে কাজ বুঝে নিয়েছে অথচ তার প্রাপ্য দেয়নি।’ -সহিহ বোখারি : ২২২৭

শ্রমিক ঠকানো ইসলামের দৃষ্টি জঘন্যতম পাপ, বরং ইসলামের নির্দেশনা হলো- শ্রমিক তার প্রাপ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না হলেও মালিক তাকে প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবে। নবী কারিম (সা.) এই ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যে জাতির দুর্বল লোকেরা জোর-জবরদস্তি ছাড়া তাদের পাওনা আদায় করতে পারে না সেই জাতি কখনো পবিত্র হতে পারে না।’ -ইবনে মাজাহ : ২৪২৬

দৈনন্দিন জীবনে শ্রমিক সমাজের ন্যায্য মজুরি প্রদানে সবার সতর্ক থাকা উচিত। যেন হাক্কুল ইবাদ লঙ্ঘনের দায়ে কিয়ামতের মাঠে আল্লাহর দরবারে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে না হয়। এ কারণে পৃথিবীর বুকে শ্রমিকের যথাযোগ্য মর্যাদা ও মজুরি নির্ধারণে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। কেননা ন্যায্য মজুরি শ্রমিকের অধিকার। আল্লাহ সবাইকে শ্রমিকের অধিকার আদায়ের তৌফিক দান করুক, আমিন।