প্রচ্ছদ » বিবিধ » বিস্তারিত

লায়লা নাজনীনকে নারী সংগঠন চেষ্টা'র সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার

 

২০২৪ জুন ০৩ ০১:১০:৪৫
লায়লা নাজনীনকে নারী সংগঠন চেষ্টা'র সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার
 

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:নারী সংগঠন 'চেষ্টা'র সভাপতি লায়লা নাজনীন হারুনকে সভাপতি পদসহ সংগঠনের সাধারণ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটির বৃহৎ অংশের সদস্যরা।

একই সাথে অর্থ আত্মসাতের বিচার দাবি করেছে সংগঠনটির সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, সভাপতি হওয়ার পর থেকে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বর্তমান সভাপতি। নিজের ইচ্ছেমতো সদস্যদের বহিষ্কার করছেন। এমনকি তোয়াক্কা করছেন না আদালতের নির্দেশনার।

আজ রোববার (২ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সেলিনা বেগম শেলি, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সহ-সভাপতি রাফেয়া আবেদীন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাঈদা মাহফুজ শাহীন, সাধারণ সদস্য সাদিকুল নাহার পাপড়ি, সাধারণ সদস্য ভিকারুন্নেসা চিনু, সাধারণ সদস্য খাদিজা বেগম। ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন কানাডা থেকে নাহার আখতার, আফরিন সুলতানা তিথি , জান্নাতুল ফেরদৌস, অস্ট্রেলিয়া থেকে রাফিয়া রহমান টফি, ধানমন্ডি থেকে দৌলত জাহান ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সদস্য ও আইনজীবী সাদেকুন নাহার পাপড়ি। তিনি বলেন, 'চেষ্টা' ২০১৩ সালে সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত একটা অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি মহান মুক্তিযুদ্ধে যাদের সবচেয়ে বেশি অবদান সেসব নারীদের সাহায্য করে মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে। বিশেষ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নির্যাতিত নারীদের জন্য। এ কাজে সংগঠনের সদস্য চাঁদা ছাড়াও সরকার ও বিত্তবানদের অনুদান রয়েছে। চেষ্টার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচিত একটি কমিটিসহ সাধারণ সদস্যদের নিয়ে কাজগুলো করে আসছিল। একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সাবেক সহ-সভাপতি রাফেয়া আবেদীন বলেন নারীদের নিয়ে এ ধরনের একটি মর্যাদাশীল সংগঠনকে বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদের সকলের।সংগঠনের বর্তমান সভাপতি তার পছন্দের দুই তিনজন সদস্যকে নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতার মধ্য দিয়ে সংগঠনের টাকা তছরুপ করছেন। যা স্বনামে পরিচিত সংগঠনটির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন সদস্যরা সভাপতি লায়লা নাজনীন ও সাধারণ সম্পাদক দিলরুবা বেগম এবং তার ভাইয়ের মেয়ে কোষাধ্যক্ষ সিফাত ই নূর একক সিদ্ধান্তে কাজ করছে। আমরা আমাদের সংগঠনে বিতর্কিত উপদেষ্টা না রাখার আপত্তি জানালেও সভাপতি অজ্ঞাত কারণে বাদ দিচ্ছেন না। সংগঠনের টাকা তসরুপ এবং অগঠনতান্ত্রিকভাবে গায়ের জোরে কমিটি বহাল রেখেছে তারা।

এর মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করে কমিটি বিলুপ্ত ও সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও ক্ষমতার জোরে ফের তা চালু করেছেন সভাপতি লায়লা হারুন। একইসঙ্গে অনুদানের টাকা নিজেদের ইচ্ছেমতো খরচ করছেন বলেও অভিযোগ তাদের। এছাড়া একজন সদস্যের বহিষ্কারাদেশ বাতিল হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও তা সভাপতি তোয়াক্কা করেননি বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে সাদেকুন নাহার বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে থেকে যে অনুদান পাওয়া যাচ্ছে তার কোনো হিসাবও দিচ্ছে না বর্তমান সভাপতি। আমাদের ধারণা, তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সংগঠনের অনুদান কমে যাচ্ছে। কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রথম দিকে আমরা বছরে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ থেকে সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকা অনুদান পেয়ে থাকতাম। কিন্তু গত তিন বছরের কোনো হিসাব আমরা পাচ্ছি না। প্রসঙ্গত, লায়লা নাজনীন হারুন বিতর্কিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুণ অর রশীদের স্ত্রী। সাবেক এই জেনারেল চেষ্টার বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।