প্রচ্ছদ » জাতীয় » বিস্তারিত
হাসিনাকে উৎখাত করে ইকোনমিস্টের ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ বাংলাদেশ
২০২৪ ডিসেম্বর ২০ ১৩:৩০:৫৬দ্য রিপোর্ট ডেস্ক:প্রতি বছরের ডিসেম্বরে দ্য ইকোনমিস্ট ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে একটি দেশের নাম ঘোষণা করে। সেক্ষেত্রে দেশটিকে ওই বছর উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ছাপ রাখতে হয়।
সেই ফল অনুযায়ী ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ত তালিকায় আরও ছিল সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড। এসব দেশকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠল বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকারী কি না, সেই হিসাবে নয়, সেরা দেশ বেছে নেওয়া হয় আগের ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে কি না, সেই বিচারে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে দ্য ইকোনমিস্টের সংবাদদাতাদের মধ্যে গভীর আলোচনার পর। এতে বাংলাদেশ বিজয়ী হিসেবে উঠে আসে এবং সিরিয়া রানার-আপ হিসেবে মনোনীত হয়।
দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে বর্ষসেরা দেশ হিসেবে নির্বাচিত করার পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান।
শেখ হাসিনা তার শাসনামলে নির্বাচনে কারচুপির আশ্রয় নেন। তিনি বিরোধীদের কারাগারে পাঠানো এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ হয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ক্ষমতার পরিবর্তনের সময় প্রায়ই প্রতিশোধমূলক সহিংসতা দেখা যায়। তবে সাম্প্রতিক পরিবর্তন আশাব্যঞ্জক। শেখ হাসিনার শাসনের অবসানের পর, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়েছে, যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে।
এ ছাড়া ২০২৫ সালে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার এবং নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দেশটিকে প্রথমে আদালতের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দিতে হবে। এগুলো সহজ কাজ নয়, তবে বাংলাদেশকে বর্ষসেরা দেশ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে, যা আরও উদার সরকার গঠনের পথে অগ্রসর হচ্ছে।
আগামী দিনের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং ২০২৫ সালের নির্বাচনের জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করা।
‘২০২৫ সালে বাংলাদেশকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করতে হবে এবং নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করতে হবে—প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে যে আদালতগুলো নিরপেক্ষ এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত করার জন্য সময় দেওয়া হচ্ছে। এই সব কিছুই সহজ হবে না। কিন্তু একজন স্বৈরাচারী শাসককে উৎখাত করে এবং একটি আরও মুক্ত সরকারের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য বাংলাদেশ আমাদের কান্ট্রি অব দ্য ইয়ারের স্বীকৃতি পাচ্ছে। ’